
গৌরনদী উপজেলার ভুরঘাটা গ্রামে ইউনুস সরদার (৫৫) নামের এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখা গুপ্তধন খুঁজতে গিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় বিশাল গর্ত খুঁড়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গুপ্তধনের খবরে সেখানে শত শত মানুষ ভিড় করছেন। লোক জানাজানি হলে ঘটে বিপত্তি।
এলাকার কয়েকজন লোক এসে ইউনুস সরদারের কাছে গুপ্তধন পাওয়া গেলে তার ভাগ দাবি করেন। তারা নানা হুমকি দেন। এতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইউনুস সরদার।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউনুস সরদার গত শনিবার কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে নিজ বসতবাড়ির আঙিনায় মাটি খননের কাজ শুরু করেন। এসময় কয়েকজন প্রতিবেশী ইউনুস সরদারের কাছে মাটি খননের কারণ জানতে চান। ইউনুস সরদার তাদের বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুম। বাড়ি থেকে মূল সড়কে যাওয়ার কাঁচারাস্তাটির কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। সেজন্য রাস্তাটি মাটি ফেলে উঁচু করবেন।
শনিবার শুরু হওয়া খননের কাজ চলে সোমবার রাত পর্যন্ত। ইউনুস সরদার ও শ্রমিকরা মিলে শাবল ও কোদাল দিয়ে প্রায় ৭ ফুট গভীর গর্ত খনন করেন। এরই মধ্যে গ্রামের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যান। এরপর গর্তটি ভরাট করে হঠাৎ করে ইউনুস সরদার আত্মগোপনে চলে যান।
শুক্রবার (১১ জুন) দুপুর পর্যন্ত ইউনুস সরদার তার বাড়িতে ফিরে আসেননি। কিন্তু সেই গর্ত থেকে ইউনুস সরদার গুপ্তধন পেয়েছে কি-না তা জানা যায়নি।
ইউনুস সরদারের এক স্বজন জানান, কয়েকদিন আগে ইউনুস সরদার স্বপ্ন দেখেন, বসতবাড়ির আঙিনায় মাটির নিচে সোনার মোহর রয়েছে। স্বপ্নে ইউনুস সরদারকে ওই সোনার মোহর উদ্ধারের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই গুপ্তধনের আশায় বিভোর ছিলেন ইউনুস। এরপর শনিবার কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে মাটি খননের কাজ শুরু করেন। কিন্তু লোক জানাজানি হলে ঘটে বিপত্তি।
সোমবার রাতে কয়েকজন লোক ইউনুস সরদারের কাছে এসে বলেন, গুপ্তধন পাওয়া গেলে তার ভাগ দিতে হবে। তা নাহলে ইউনুস সরদারের ক্ষতি হবে বলে তারা হুমকি দেন। এ ঘটনার পর ইউনুস সরদার আত্মগোপনে চলে যান।
দুইদিন আগে ইউনুস সরদারের বাড়িতে পুলিশ আসে। তারা এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি ইউনুস সরদারকে বাড়ি ফিরে এসে থানায় যোগাযোগ করতে বলে পুলিশ।
খাঞ্জপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ও ভুরঘাটা গ্রামের বাসিন্দা কামাল হাওলাদার বলেন, ‘লোকমুখে বিষয়টি জানতে পেরে ইউনুস সরদারের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে গর্ত খুঁড়ে সেখানে কিছু পাওয়া গেছে বলে আমার মনে হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এখন বিভিন্ন ধরনের কথা রটানো হচ্ছে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী গৌরনদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার ইউনুস সরদারের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার পরিবারের সদস্য ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে সেখান থেকে গুপ্তধন বা মূল্যবান কোনো বস্তু পাওয়া যায়নি। এরপর পরিবারের এক সদস্যদের কাছ থেকে ইউনুস সরদারের মোবাইল নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ইউনুস সরদারের কথাবার্তায় গুপ্তধন পেয়েছেন বলে মনে হয়নি। এরপরও তাকে থানায় এসে দেখা করতে বলা হয়েছে।